বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | নবম-দশম শ্রেণী | অধ্যায়-০২ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর-০২

Table of Contents
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় | নবম-দশম শ্রেণী | অধ্যায়-০১ | সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর-০২

∎ প্রশ্ন ০২: মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দুলু মিয়া ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গভীর রাতে তিনি দেখতে পান একদল সশস্ত্র লোক কারাগারের বিশেষ সেলে প্রবেশ করে কয়েকজনকে হত্যা করেছে। দুলু মিয়া এ কথা তার বাবাকে জানান। তার বাবা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন যে, এ হত্যার মূল উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের এ অর্জনসমূহ ধ্বংস করা।
 
ক. ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কী?
খ. গণপরিষদ কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. দুলু মিয়ার দেখা হত্যাকাণ্ডটি তোমার পঠিত বিষয়বস্তুর যে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি দুলু মিয়ার বাবার বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ কর? তোমার পঠিত বিষয়বস্তুর আলোকে যুক্তি উপস্থাপন কর।

নং প্রশ্নের উত্তর 

ক. ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল হচ্ছে সেই তহবিল যেখান থেকে প্রসূত নারীদের অনুদান প্রদান করা হয়।

খ. ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু 'বাংলাদেশ গণপরিষদ' নামে একটি আদেশ জারি করেন। এ আদেশ বলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্যগণ গণপরিষদের সদস্য বলে পরিগণিত হন। ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় আইনকানুন পাম ও কার্যকর করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় এটি অতীব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

গ. দুলু মিয়ার দেখা হত্যাকান্ডটি আমার পঠিত ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের জেলহত্যা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হন। তারপর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খুনিচক্র সেনাসদস্যগণ দেশত্যাগের পূর্বে খন্দকার মোশতাকের অনুমতি নিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে সেখানে বন্দী অবস্থায় থাকা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা যথাক্রমে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সংঘটিত হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আর একটি কলঙ্কময় অধ্যায় । তাছাড়া পৃথিবীর ইতিহাসে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা দ্বিতীয়টি নেই।

ঘ. আমি দুলু মিয়ার বাবার বক্তব্যের সাথে পুরাপুরি একমত। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খুনিচক্র সেনাসদস্যগণ দেশত্যাগের পূর্বে খন্দকার মোশতাকের অনুমতি নিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে বেআইনিভাবে। প্রবেশ করে সেখানে বন্দী অবস্থায় থাকা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা যথা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও এ. এইচ. এম. কামারুজ্জামান কে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সংঘটিত হয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আর একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। এ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড দেশের জনগণ এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ ঘটনা মোশতাকের পতন ত্বরান্বিত করে। খুনিরা দেশত্যাগে বাধ্য হয়। এ হত্যাকাণ্ড ছিল ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত, স্বাধীনতাবিরোধী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সম্মিলিত ষড়যন্ত্র ও নীলনকশার বাস্তবায়ন। উভয় হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অর্জনসমূহ ধ্বংস, দেশকে নেতৃত্বশূন্য এবং পাকিস্তানি ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠা করা। ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড একই গোষ্ঠী সংঘটিত করে।